প্রকাশিত: Sat, Mar 23, 2024 12:07 PM
আপডেট: Mon, Jun 23, 2025 10:20 AM

‘মন্ত্রী কি নিজে গিয়ে বাস রং করব’

প্রভাষ আমিন: ১. ‘১২ বছরের কথা বলে অপবাদ দিচ্ছেন কেন? এই সময়ে পদ্মা সেতু হয়েছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হয়েছে। মেট্রোরেল চালু হয়েছে। ১২ বছরে কি কম কাজ করেছি? সারা দেশে আজ কত ফ্লাইওভার, কত ফোর লেন। সমতল থেকে পাহাড়ে রাস্তা আর রাস্তা। এই মন্ত্রণালয়ে যে কাজ হয়েছে, তা আর কোথাও হয়েছে?’ ১২ বছরের বেশি সময় ধরে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকার পরও ঢাকায় কীভাবে লক্কড়ঝক্কড় বাস চলছে; এমন প্রশ্নের জবাবে অভিমানী প্রতিক্রিয়া ছিল ওবায়দুল কাদেরের। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের এফডিসি র‌্যাম্প খুলে দেয়ার পর সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন তিনি।

২. আমি ওবায়দুল কাদেরের দাবির সাথে একমত। গত এক যুগে ওবায়দুল কাদের বদলে দিয়েছেন বাংলাদেশের যোগাযোগ অবকাঠামো। বাংলাদেশে এখন আর দুর্গম বলে কোনো জায়গা নেই। এক্সপ্রেসওয়ে, এলিভেটেড এক্সেপ্রসওয়ে, হাইওয়ে থেকে শুরু করে গ্রামের রাস্তাও বদলে গেছে।

৩. আর এই বদলে গেছে বলেই ঢাকার লক্কড়ঝক্কড় বাসগুলো আরো বেশি চোখে পড়ছে। একসময় এই লক্কড়ঝক্কড় বাসকেই আমরা নিয়তি ধরে নিয়েছিলাম। কিন্তু আধুনিক মেট্রোরেল থেকে নেমেই লক্কড়ঝক্কড় বাসে উঠতে গেলে তুলনাটা আরো বেশি করে আসে। উন্নয়নটা তো সমান্তরাল হতে হবে। মেট্রোরেল হোক আর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে- ওপরে উঠলেই মনে হবে বিদেশ বিদেশ। কিন্তু নিচে নামলেই অসহনীয় জ্যাম আর লক্কড়ঝক্কড় বাস- যেন মান্ধাতা আমলের বাংলাদেশ। দুই বাংলাদেশকে মেলানো আসলেই কঠিন।

৪. ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘এসব গাড়ি আমরা বন্ধ করে দিতে পারি। কিন্তু রিপ্লেস তো নেই। বাস যখন বন্ধ করে দেব, তখন সাংবাদিকেরাই সবার আগে বিক্ষোভ দেখাবেন। লোকজন দাঁড়িয়ে আছে, হাজার হাজার মানুষ বাস পাচ্ছে না। আমাদের অবস্থা তো শাঁখের করাত। এটা করলেও দোষ, ওটা করলেও দোষ।’ এখানেও ভুল কিছু বলেননি তিনি। কিন্তু ১২ বছরে ধাপে ধাপে তো বিকল্প তৈরি করা যেতো। যায়নি কেন?

৫. ক্ষুব্ধ ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বারবারই বলা হলেও বাসের চেহারা বদলাচ্ছে না। সরকারের গাফিলতির কী আছে? আমি মন্ত্রী কি নিজে গিয়ে বাস রং করব?’ অবশ্যই মন্ত্রী নিজে গিয়ে বাসের রং করবেন না। কিন্তু যাদের রং করার কথা, তারা যেন করে সেটা নিশ্চিত করবেন। বারবার বলার পরও যারা রং করছেন না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। ফিট না হলে তো বিআরটিএ তাদের ফিটনেস সার্টিফিকেটই দেয়ার কথা না। তাহলে কীভাবে চলছে এই লক্কড়ঝক্কড় বাসগুলো। যদি তাদের ফিটনেস থাকে, তাহলে বিআরটিএ অন্যায় করছে। আর যদি না থাকে, তাহলে রাস্তায় তাদের চলাচল বেআইনী। বিকল্প নেই বলে দিনের পর দিন তো অন্যায় চলতে পারে না।

প্রভাষ আমিন: হেড অব নিউজ, এটিএন নিউজ